০৮:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ময়মনসিংহর গফরগাঁওয়ের পাগলায় চাঁদা বাণিজ্যে চাচা-ভাতিজার

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানাধীন বাশিয়া এলাকার একটি অংশে সম্প্রতি সময়ে চাঁদাবাজির উত্তাপ বেড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা এবং সামাজিক ব্যক্তিবর্গদের মধ্য থেকে অভিযোগ উঠেছে নামা বাশিয়া গ্রামের মৃত সুলতান আহমেদের ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য রইছ উদ্দিন (৪৫) এবং শহিদ মিয়ার ছেলে সাগরের (২৭) বিরুদ্ধে। তারা দুইজন চাচা এবং ভাতিজা এবং টাঙ্গাব ইউনিয়নের নামা বাশিয়া গ্রামের বাগের বাজারস্থ এলাকার বাসিন্দা।

অভিযোগ এসেছে, গত বছরের ৫ আগষ্টে আওয়ামী শাসনের পতনের পর থেকে বাশিয়া বাঘের বাজারসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষের মাঝে চাচা-ভাতিজার নেতৃত্বে বিভিন্ন সময় নামে বেনামে, কারনে অকারনেই যেকোন ব্যক্তির কাছ থেকে চাঁদা দাবী করে থাকে তারা। এসব ঘটনা বাশিয়া এবং বাঘেরবাজার এলাকায় ব্যবসায়ী এবং নানা শ্রেনীর মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। উপজেলার টাঙ্গাব ইউনিয়নের বাশিয়া এলাকায় অনুসন্ধান করে তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা যায়, বাঘের বাজারস্থ দোকানের শরীফ মিয়া নামে এক ব্যবসয়াীর কাছ থেকে দুই লক্ষ টাকা দাবী করে এবং পরে বিশ হাজার টাকা প্রদান করেন তিনি। তার কিছুদিন পর আবারও এক লক্ষ টাকা দাবী করেন।

ভুক্তভোগী শরীফ মিয়া জানান, টাকা না দিলে বাজারে ব্যবসা করতে দিবে না বলে প্রায় সময়ই হুমকি দেয়। এবং দ্বিতীয়বার টাকা দেওয়ার কারনে দোকানটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। তিনি আরো বলেন দাবীকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে আমকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে গভীর রাতে সাগরের সাঙ্গ-পাঙ্গদের নিয়ে একটি দেয়ালে “জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু” লিখে আমাার নাম লিখে দেয়। এবং আমাকে দেখলেই থানা থেকে পুলিশ নিয়ে আসে। সেকারনে বর্তমানে আমি বাড়িতে থাকতে পারিনা। সেজন্য আমি পুলিশের উর্ধ্বতন দায়িত্বশীলদের সহযোগিতা কামনা করি।

নামা বাশিয়া গ্রামের আরেক বাসিন্দা হান্নান মিয়া বলেন, সাগর মিয়া তার দলবল নিয়া আমার বাড়িতে হামলা করে এক লক্ষ টাকা দাবী করে। আমি বাড়িতে না থাকায় আমার স্ত্রী তাকে আমার ঘরে সর্বসাকুল্যে জমানো পাঁচ হাজার টাকা দেয়। পরে আরো টাকা দাবী করে এবং হুমকি দেয়। তিনি আরো বলেন আমি বিএনপি করি তারাও বিএনপি করে তাহলে কিসের কারনে আমার বাড়িতে টাকা দাবী করতে আসে। আমি এর প্রতিকার চাই।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন যায়গায় টাকা দাবী করার সময় সাগর নিজেকে সমন্বয়ক এবং ছাত্রদল নেতা পরিচয় দিয়ে থাকে। এমনকি পুলিশের ভয় দেখায় নিয়মিত। ফলে সাধারণ মানুষের প্রশাসনের প্রতি নেতিবাচক ধারনার প্রভাব পরছে।

জানা গেছে, অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে পরিবেশের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মানুষের টাকায় কিনেছেন মোটরবাইক সহ নানা কিছু। স্থানীয়দের কাছে ভাতিজা (সাগর) সমন্বয়ক ও ছাত্রদল নেতা, আর চাচা (রইছ উদ্দিন) তাঁতী দলের বহিষ্কৃত নেতা। সাগরের ব্যক্তিগত জীবনে পাঁচটি (৫) বিবাহ এবং অসংখ্য যায়গায় নারী কেলেঙ্কারির কারনে গণধোলাই সহ নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে।

এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা এবং তথ্য সংগ্রহকালে সাংবাদিককে হুমকি দেয়ারও অভিযোগ এসেছে চক্রটির বিরুদ্ধে।

পরিচয় গোপন রেখে একটি সূত্র বলছে, সাগরের আরেক সহযোগী (শামীম) নিজের পরিচয় গোপন করে পার্শ্ববর্তী শ্রীপুরের ভাংনাহাটি এলাকার আশিক পরিচয়ে দেলোয়ার নামে এক সাংবাদিককে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে হুমকি দেন। পরে কারিগরি সহায়তায় তার নাম পরিচয় শামীম, পাগলা এলাকায় সনাক্ত হয়। এর আগে গত ৬ ডিসেম্বর (২০২৪) ডাকবাংলা বাজার এলাকায় সংবাদ সংগ্রহের সময় প্রকাশ্যে চড়াও হয়েছিল সাগর। অবশ্য জনতার উপস্থিতির কারনে পিছু হটে তখন।

এ বিষয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ এবং দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ গফরগাঁও উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মুশফিকুর রহমান।

সার্বিক বিষয়ে কথা বলতে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করা হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং গফরগাঁও সার্কেল অফিসার অফরোজা নাজনীন জানান, অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আসতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

ট্যাগ
বিস্তারিত জানুন

জনপ্রিয়

রাজধানীর মোহাম্মদপুর সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের ২জন সদস্য ও ১জন ছিনতাইকারীকে আটক

ময়মনসিংহর গফরগাঁওয়ের পাগলায় চাঁদা বাণিজ্যে চাচা-ভাতিজার

সময় ০৫:২১:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানাধীন বাশিয়া এলাকার একটি অংশে সম্প্রতি সময়ে চাঁদাবাজির উত্তাপ বেড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা এবং সামাজিক ব্যক্তিবর্গদের মধ্য থেকে অভিযোগ উঠেছে নামা বাশিয়া গ্রামের মৃত সুলতান আহমেদের ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য রইছ উদ্দিন (৪৫) এবং শহিদ মিয়ার ছেলে সাগরের (২৭) বিরুদ্ধে। তারা দুইজন চাচা এবং ভাতিজা এবং টাঙ্গাব ইউনিয়নের নামা বাশিয়া গ্রামের বাগের বাজারস্থ এলাকার বাসিন্দা।

অভিযোগ এসেছে, গত বছরের ৫ আগষ্টে আওয়ামী শাসনের পতনের পর থেকে বাশিয়া বাঘের বাজারসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষের মাঝে চাচা-ভাতিজার নেতৃত্বে বিভিন্ন সময় নামে বেনামে, কারনে অকারনেই যেকোন ব্যক্তির কাছ থেকে চাঁদা দাবী করে থাকে তারা। এসব ঘটনা বাশিয়া এবং বাঘেরবাজার এলাকায় ব্যবসায়ী এবং নানা শ্রেনীর মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। উপজেলার টাঙ্গাব ইউনিয়নের বাশিয়া এলাকায় অনুসন্ধান করে তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা যায়, বাঘের বাজারস্থ দোকানের শরীফ মিয়া নামে এক ব্যবসয়াীর কাছ থেকে দুই লক্ষ টাকা দাবী করে এবং পরে বিশ হাজার টাকা প্রদান করেন তিনি। তার কিছুদিন পর আবারও এক লক্ষ টাকা দাবী করেন।

ভুক্তভোগী শরীফ মিয়া জানান, টাকা না দিলে বাজারে ব্যবসা করতে দিবে না বলে প্রায় সময়ই হুমকি দেয়। এবং দ্বিতীয়বার টাকা দেওয়ার কারনে দোকানটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। তিনি আরো বলেন দাবীকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে আমকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে গভীর রাতে সাগরের সাঙ্গ-পাঙ্গদের নিয়ে একটি দেয়ালে “জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু” লিখে আমাার নাম লিখে দেয়। এবং আমাকে দেখলেই থানা থেকে পুলিশ নিয়ে আসে। সেকারনে বর্তমানে আমি বাড়িতে থাকতে পারিনা। সেজন্য আমি পুলিশের উর্ধ্বতন দায়িত্বশীলদের সহযোগিতা কামনা করি।

নামা বাশিয়া গ্রামের আরেক বাসিন্দা হান্নান মিয়া বলেন, সাগর মিয়া তার দলবল নিয়া আমার বাড়িতে হামলা করে এক লক্ষ টাকা দাবী করে। আমি বাড়িতে না থাকায় আমার স্ত্রী তাকে আমার ঘরে সর্বসাকুল্যে জমানো পাঁচ হাজার টাকা দেয়। পরে আরো টাকা দাবী করে এবং হুমকি দেয়। তিনি আরো বলেন আমি বিএনপি করি তারাও বিএনপি করে তাহলে কিসের কারনে আমার বাড়িতে টাকা দাবী করতে আসে। আমি এর প্রতিকার চাই।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন যায়গায় টাকা দাবী করার সময় সাগর নিজেকে সমন্বয়ক এবং ছাত্রদল নেতা পরিচয় দিয়ে থাকে। এমনকি পুলিশের ভয় দেখায় নিয়মিত। ফলে সাধারণ মানুষের প্রশাসনের প্রতি নেতিবাচক ধারনার প্রভাব পরছে।

জানা গেছে, অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে পরিবেশের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মানুষের টাকায় কিনেছেন মোটরবাইক সহ নানা কিছু। স্থানীয়দের কাছে ভাতিজা (সাগর) সমন্বয়ক ও ছাত্রদল নেতা, আর চাচা (রইছ উদ্দিন) তাঁতী দলের বহিষ্কৃত নেতা। সাগরের ব্যক্তিগত জীবনে পাঁচটি (৫) বিবাহ এবং অসংখ্য যায়গায় নারী কেলেঙ্কারির কারনে গণধোলাই সহ নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে।

এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা এবং তথ্য সংগ্রহকালে সাংবাদিককে হুমকি দেয়ারও অভিযোগ এসেছে চক্রটির বিরুদ্ধে।

পরিচয় গোপন রেখে একটি সূত্র বলছে, সাগরের আরেক সহযোগী (শামীম) নিজের পরিচয় গোপন করে পার্শ্ববর্তী শ্রীপুরের ভাংনাহাটি এলাকার আশিক পরিচয়ে দেলোয়ার নামে এক সাংবাদিককে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে হুমকি দেন। পরে কারিগরি সহায়তায় তার নাম পরিচয় শামীম, পাগলা এলাকায় সনাক্ত হয়। এর আগে গত ৬ ডিসেম্বর (২০২৪) ডাকবাংলা বাজার এলাকায় সংবাদ সংগ্রহের সময় প্রকাশ্যে চড়াও হয়েছিল সাগর। অবশ্য জনতার উপস্থিতির কারনে পিছু হটে তখন।

এ বিষয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ এবং দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ গফরগাঁও উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মুশফিকুর রহমান।

সার্বিক বিষয়ে কথা বলতে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করা হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং গফরগাঁও সার্কেল অফিসার অফরোজা নাজনীন জানান, অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আসতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।